সবকিছুই যেন নিশ্চিত ছিল—কার্লো আনচেলত্তির ব্রাজিল জাতীয় দলের কোচ হওয়া শুধু সময়ের অপেক্ষা। আনন্দে ভাসছিলেন ব্রাজিলিয়ান ফুটবল ভক্তরাও। তবে নাটকীয় মোড় নিতে সময় লাগেনি। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই দৃশ্যপট বদলে যায়। এখন পরিস্থিতি বলছে, আনচেলত্তি রিয়াল মাদ্রিদই ছাড়ছেন না, আর ব্রাজিলের কোচও হচ্ছেন না।
প্রশ্ন উঠছে—সবকিছু চূড়ান্ত হওয়ার পরও কেন এমন সিদ্ধান্ত? নানা ব্যাখ্যা থাকলেও ব্রাজিলীয় সংবাদমাধ্যম গ্লোবো একে সরাসরি রিয়াল মাদ্রিদ সভাপতি ফ্লোরেন্তিনো পেরেজের ‘ইশারা’ বলেই দাবি করছে।
সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, স্পেনের স্থানীয় সময় বুধবার বিকেলে লন্ডনে ব্রাজিলের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আনচেলত্তির বৈঠক হয়। রিয়াল কর্তৃপক্ষ বিষয়টিকে ভালোভাবে নেয়নি। ওই সময়ই আনচেলত্তিকে তার ২০২৬ পর্যন্ত চুক্তির কথা স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়। পাশাপাশি জানিয়ে দেওয়া হয়, ক্লাব বিশ্বকাপে রিয়ালের ডাগআউট সামলাতেই হবে তাকে।
প্রথমে ধারণা করা হয়েছিল, রিয়াল ছাড়লেও চুক্তি অনুযায়ী আনচেলত্তিকে ২০২৬ সাল পর্যন্ত পুরো পারিশ্রমিক দেওয়া হবে। এমন প্রস্তাবের বিষয়ে বেশির ভাগ পরিচালক রাজি থাকলেও শেষ মুহূর্তে ভেটো দেন ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ। তার আপত্তিতেই পুরো বিষয়টি থেমে যায়। আনচেলত্তিও শেষপর্যন্ত পিছু হটেন।
এই নাটকীয়তার পেছনে মূল ভূমিকা রেখেছে রিয়াল মাদ্রিদের সভাপতি ফ্লোরেন্তিনো পেরেজের কঠোর সিদ্ধান্ত। ব্রাজিলীয় সংবাদমাধ্যম গ্লোবো জানিয়েছে, তিনিই এককভাবে ভেঙে দিয়েছেন কার্লো আনচেলত্তির সঙ্গে ব্রাজিল ফুটবল ফেডারেশনের সম্ভাব্য চুক্তি।
ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ২০২৬ সালের আগে রিয়াল ছাড়লে আনচেলত্তিকে কোনো ‘এক্সিট ফি’ দেওয়া হবে না। একই সঙ্গে ব্রাজিলে যোগ দেওয়ার ক্ষেত্রেও কোনো আর্থিক সমঝোতা হতে দেওয়া হবে না। এমন অবস্থায়, চুক্তি চূড়ান্ত হওয়ার দ্বারপ্রান্তে এসেও সরে দাঁড়ান আনচেলত্তি।
এদিকে গ্লোবো-র আরেক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে আরও একটি কারণ—ব্রাজিলের রাজনৈতিক ও ক্রীড়াবিষয়ক অস্থিরতা। দেশটির দুর্বল নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং ফুটবল ফেডারেশনের অনিশ্চয়তাপূর্ণ পরিবেশও আনচেলত্তিকে বিরত করেছে সিদ্ধান্তে অগ্রসর হতে।
ফলে আনচেলত্তি অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটেছে, আর ব্রাজিল ফুটবল কনফেডারেশনও এখন অন্য বিকল্পের দিকে নজর দিচ্ছে। নতুন কোচ হিসেবে আলোচনায় উঠে এসেছেন সৌদি ক্লাব আল-হিলালের কোচ হোর্হে হেসুস।
ইউএ / টিডিএস