বাংলাদেশ ফুটবল দলের নিয়মিত অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া ভারত ম্যাচে খেলেননি। দেশ ছাড়ার আগে এবং ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে জামাল অধিনায়ক হিসেবে উপস্থিত থাকলেও, গতকাল শিলংয়ে বাংলাদেশের স্প্যানিশ কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা তাকে একাদশে রেখেছিলেন না। পাঁচজন খেলোয়াড় বদল করলেও জামাল ছিলেন না বিবেচনায়।
জামাল না থাকায় আর্মব্যান্ড ছিল সিনিয়র ডিফেন্ডার তপু বর্মনের হাতে। কিন্তু ২২ মিনিটে তপু চোট পেয়ে মাঠের বাইরে চলে গেলে আর্মব্যান্ড চলে যায় রহমত মিয়ার হাতে। পরে ৭৫ মিনিটে রহমতও মাঠ ছেড়ে চলে গেলে আর্মব্যান্ড চলে যায় সোহেল রানার হাতে। এক ম্যাচে তিনবার অধিনায়ক পরিবর্তন অবশ্যই বিশেষ একটি ঘটনা।
ভারতের বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে জামালকে না খেলানোর বিষয়ে স্প্যানিশ কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা বলেন, “ম্যাচের পরিস্থিতি অনুযায়ী খেলোয়াড়রা বেঞ্চে ছিলেন। আজকের (গতকাল) খেলায় জামাল আমাদের বিকল্প ছিলেন। দ্বিতীয়ার্ধের খেলার পরিক্রমা অনুযায়ী শারীরিক অবস্থান বিবেচনা করে রানাকে মাঠে নামানো হয়েছে।”
হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা গত দেড় বছরে জামাল ভূঁইয়াকে একাদশে নিয়মিত জায়গা দেননি, কিংবা কখনও এক অর্ধে তাকে তুলে নিয়েছেন। প্রশ্ন উঠছে, অধিনায়ক হিসেবে একজন খেলোয়াড় যদি বেশিরভাগ ম্যাচে ৯০ মিনিট মাঠে না থাকতে পারেন, তবে তার হাতে আর্মব্যান্ড কেন? এই প্রশ্ন গত কিছুদিন ধরেই উঠে আসছিল, কিন্তু গতকাল ভারত ম্যাচে জামালকে না খেলানোয় তা আরও জোরালো হয়েছে। তবে কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা মন্তব্য করেছেন, “মাঠে না থাকলেও জামাল আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, তার কোয়ালিটি বিশেষ ধরনের।”
এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের প্রস্তুতির সময় থেকে কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছেন। ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের একাদশ এবং খেলোয়াড় পরিবর্তন নিয়ে নানা সমালোচনা উঠেছে। জামাল ভূঁইয়া এক মাস দলের সঙ্গে অনুশীলন করেছেন এবং ফিট ছিলেন, তারপরও তাকে একাদশে না রাখা হয়েছে। ২৩ জন খেলোয়াড়ের মধ্যে ১৬ জন মাঠে নামলেও নিয়মিত অধিনায়ক জামালকে মাঠে না নামানোকে কেন্দ্র করে আলোচনা বাড়ছে। অনেকেই মনে করছেন, জামাল ভূঁইয়া এখন শুধু সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক, মাঠে আরেকজন।
এ ধরনের ঘটনা সাধারণত দেখা যায় না, যেখানে অধিনায়ক মাঠে না নামেন। ভারতের বিপক্ষে জামালকে না খেলানোয় কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা যেমন সমালোচনার মুখে পড়েছেন, তেমনি জামালও একটি বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছেন। অধিনায়ক হয়েও মাঠে নামতে না পারা, দলের অন্য খেলোয়াড়দের কাছে তার অবস্থান কিছুটা কমিয়ে দিয়েছে। অন্যদিকে, ফিট থাকা সত্ত্বেও হৃদয় ও সোহেল রানাকে গুরুত্ব দেওয়া, এটি জামালের পারফরম্যান্স এবং কোচের প্রতি তার আস্থার অভাবকেই ইঙ্গিত করে।