জনপ্রিয় ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট আইপিএল বরাবরই তরুণ ও নতুন ক্রিকেটারদের জন্য বড় মঞ্চ হিসেবে বিবেচিত। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এখনও অনভিষিক্ত অনেক খেলোয়াড় এই লিগে সুযোগ পেয়ে থাকেন, যা তাদের জীবনধারায় এনে দেয় বড় পরিবর্তন। অর্থ, খ্যাতি ও সুযোগের সমন্বয়ে এই মঞ্চ অনেকের স্বপ্নপূরণের জায়গা হয়ে ওঠে।
তবে সম্প্রতি আইপিএলে ‘আনক্যাপড’ বা অনভিষিক্ত ক্রিকেটারদের নিয়মে পরিবর্তন আনা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে, বিশেষ করে মহেন্দ্র সিং ধোনির ক্ষেত্রে। ধোনির জন্য এই নিয়মে ব্যতিক্রম রাখায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভারতের কিংবদন্তি ব্যাটার সুনীল গাভাস্কার।
একটি কলামে গাভাস্কার লিখেছেন, ধোনির জন্য ‘আনক্যাপড’ ক্রিকেটারের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক বাড়িয়ে ৪ কোটি রুপি করায় ভারতীয় ক্রিকেট ক্ষতির মুখে পড়ছে। তার মতে, জাতীয় দলে দীর্ঘদিন না খেললেও ধোনিকে ‘আনক্যাপড’ হিসেবে গণ্য করা হয়, যা অন্যান্য তরুণ খেলোয়াড়দের ক্ষেত্রেও একটি ভুল বার্তা দিচ্ছে।
বিসিসিআইয়ের নিয়ম অনুযায়ী, যারা পাঁচ বছরের মধ্যে জাতীয় দলের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেননি, তারা আনক্যাপড ক্যাটাগরিতে পড়েন। সেই নিয়মে ধোনি পড়লেও তার জন্য নির্ধারিত হয়েছে সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক। এই প্রেক্ষাপটে গাভাস্কারের মত, তরুণ ক্রিকেটাররা বড় অঙ্কের টাকায় দল পেলে শুরুতে উৎসাহ পেলেও, পরে খেলায় আগ্রহ হারিয়ে ফেলতে পারেন।
গাভাস্কার লিখেছেন, “অনেক খেলোয়াড় বিপুল অর্থ পাওয়ার পর খেলার ক্ষুধা ও উৎসাহ হারিয়ে ফেলেন। এতে শুধু ফ্র্যাঞ্চাইজি নয়, ক্ষতি হয় ভারতীয় ক্রিকেটেরও। যদি কোনো খেলোয়াড় ভালো না করে দলে জায়গা হারায়, তাহলে তার ক্যারিয়ার থেমে যেতে পারে।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন, “বড় অঙ্কের বিনিময়ে যেসব খেলোয়াড়দের নেওয়া হয়, তাদের অধিকাংশই প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হন। তারা পরে হয়তো উন্নতি করেন, তবে তা সাধারণত হয় স্থানীয় লিগে খেলে—not আইপিএলের মতো প্রতিযোগিতায়।”
প্রসঙ্গত, ২০২৫ আইপিএলের মেগা নিলামে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু ৬ কোটি রুপিতে কিনেছিল ডানহাতি পেসার রশিখ দার সালামকে। কিন্তু পুরো মৌসুমে তিনি খেলেছেন মাত্র দুটি ম্যাচ, পেয়েছেন মাত্র একটি উইকেট। এমন উদাহরণ তুলে ধরেই গাভাস্কার বিসিসিআইকে পরামর্শ দিয়েছেন, তরুণ খেলোয়াড়দের মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে আরও বাস্তবসম্মত নীতি গ্রহণ করার।