নিশ্চিতভাবেই ফুটবল ক্যারিয়ারের শেষ প্রান্তে দাঁড়িয়ে আছেন দুই মহাতারকা—লিওনেল মেসি ও ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। বয়সের ভার পড়েছে পায়ে, তবু মাঠে নামলে এখনো আলো ছড়ান তারা। একসময় ইউরোপের জায়ান্ট ক্লাবগুলোর হয়ে মুখোমুখি হওয়া এই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীরা বর্তমানে খেলছেন ইউরোপের বাইরে, তবু তাদের মধ্যে লড়াই ও শিরোপা জয়ের তৃষ্ণা এখনো অক্ষুণ্ণ। তবে গতকাল (বুধবার) রাতটা দুজনের জন্যই হতাশার ছিল। ভিন্ন দুটি মহাদেশের সেমিফাইনালে নেমে স্বপ্নভঙ্গ হলো দুই গ্রেটেরই।
বাংলাদেশ সময় অনুযায়ী রাত ও ভোরের মাঝামাঝি সময়ে মাঠে নামেন রোনালদো ও মেসি। প্রথমে সৌদি আরবের জেদ্দায় এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে রোনালদোর ক্লাব আল নাসর মুখোমুখি হয় জাপানের কাওয়াসাকি ফ্রন্তেলের। নাটকীয় এক ম্যাচে ৩-২ গোলে হেরে আসর থেকে বিদায় নেয় আল নাসর। ম্যাচে শেষ মুহূর্তে এক গোলের সুযোগ হাতছাড়া করেন রোনালদো, যা ছিল সমতায় ফেরার বড় সুযোগ। বয়স ৪০ ছুঁইছুঁই হলেও গোলের ক্ষুধা কমেনি সিআরসেভেনের। কিছুদিন আগেই ৯৩৪তম গোলের মাইলফলক ছুঁয়ে ঘোষণা দিয়েছিলেন, লক্ষ্যের নাম ১০০০ গোল। কিন্তু এই হারে হতাশায় ভেঙে পড়েন রোনালদো। ম্যাচ শেষে সামাজিক মাধ্যমে আবেগভরা পোস্টে লেখেন, ‘কখনও কখনও স্বপ্নকে অপেক্ষা করতে হয়। আমি এই দল এবং আমাদের পারফরম্যান্স নিয়ে গর্বিত।’
রোনালদোর হতাশার ঘণ্টা কয়েক পর যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় মাঠে নামেন মেসি। কনকাকাফ চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালের ফিরতি লেগে ভ্যাঙ্কুভার হোয়াইটক্যাপসের বিপক্ষে খেলতে নামে ইন্টার মায়ামি। প্রথম লেগে ২-০ গোলে পিছিয়ে থাকা মেসিরা ঘরের মাঠে ঘুরে দাঁড়ানোর আশায় ছিলেন। শুরুটা আশাব্যঞ্জকও ছিল—জর্দি আলবার গোলে নবম মিনিটেই এগিয়ে যায় মায়ামি। কিন্তু এরপর আর কিছুই ঠিকঠাক চলেনি। পুরো ম্যাচে একাধিক সুযোগ পেলেও তা কাজে লাগাতে ব্যর্থ হন মেসি ও সুয়ারেজ। উল্টো ৩-১ ব্যবধানে হেরে বিদায় নেয় দলটি।
ম্যাচ শেষে হতাশ ছিলেন মেসিও। কোচ হাভিয়ের মাশ্চেরানো পরে বলেন, ‘আমরা দুইটি সেমিফাইনালে উঠেছিলাম, যা অনেক ক্লাবই পারেনি। কিন্তু এখন হতাশার অনুভূতি কাজ করছে। আমরা ফাইনালে যেতে চেয়েছিলাম। প্রতিপক্ষ আমাদের চেয়ে ভালো খেলেছে, সুযোগগুলো কাজে লাগিয়েছে। এখন আমাদের মনোযোগ এমএলএস কাপে।’
দুই কিংবদন্তির জন্য ছিল এক রাতের দুটি স্বপ্নভঙ্গ। কিন্তু ফুটবলের প্রতি তাদের ভালোবাসা, সংগ্রাম আর লক্ষ্য পূরণের চেষ্টা এখনো অব্যাহত।