বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে পুলিশের হয়ে খেলছেন কানাডা প্রবাসী ফুটবলার কাজেম শাহ। জাতীয় দলের জার্সিও ইতোমধ্যে গায়ে উঠেছে সাবেক ক্রিকেটার হালিম শাহর এই ছেলের। আর এখন কাজেম অপেক্ষায় আছেন এক বিশেষ মুহূর্তের—প্রিয় বন্ধু সামিত সোমের সঙ্গে মাঠে নামার।
প্রায় সমবয়সী কাজেম ও সামিত একসঙ্গে বড় হয়েছেন কানাডার ক্যালগেরিতে। দু’জনই খেলেছেন সাউথ ওয়েস্ট ইউনাইটেড ক্লাবে। সামিতের জন্ম ১৯৯৭ সালে, কাজেমের ১৯৯৮ সালে। এক বছর বয়সের পার্থক্য হলেও বন্ধুত্ব ছিল গাঢ়।
১০ জুন এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে বাংলাদেশের হয়ে অভিষেক হতে যাচ্ছে সামিতের। বিষয়টি নিয়ে কাজেমের উচ্ছ্বাস, ‘আমাদের বাসা ছিল কাছাকাছি। আমরা একে অপরকে খুব ভালোভাবে চিনি। এখন একসঙ্গে জাতীয় দলে খেলার সুযোগ আসছে। তবে সেটার জন্য আমাকে নিজের জায়গা পাকা করতে হবে। লিগে ভালো খেলে এবং অনুশীলনে নিজের সেরাটা দিয়ে দলে ঢুকতে হবে।’
সামিত সম্পর্কে কাজেম বলেন, ‘সে অসাধারণ একজন মিডফিল্ডার। গতি, পাসিং এবং বক্স-টু-বক্স খেলার দারুণ সামর্থ্য আছে। তার অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের মিডফিল্ডে বড় অবদান রাখবে।’
সামিত এর আগে কানাডা জাতীয় দলের হয়ে খেলেছেন, অন্যদিকে কাজেম বাংলাদেশে প্রিমিয়ার লিগে তিন মৌসুম কাটিয়ে এখন জাতীয় দলে। এ প্রসঙ্গে কাজেম স্বীকার করেন, ‘সে কানাডা দলে খেলার মতো মানের ফুটবলার। আমি বাংলাদেশে খেলছি—এটা বাস্তবতা। তবে এখানেই আমি নিজের জায়গা করে নিতে চাই।’
ফুটবল মাঠ ছাড়াও একসঙ্গে পথচলা তাদের পড়ালেখায়ও। আলবার্টা বিশ্ববিদ্যালয়ে একসঙ্গে পড়েছেন তারা। সামিত পরে মন্ট্রিয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ে যান, ফুটবল এবং প্রকৌশল—দুই জগতেই নিজের অবস্থান পাকা করতে।
হাই প্রোফাইল এই মিডফিল্ডারের আগমন নিয়ে সাবেক ফুটবলার ও কোচদের মধ্যে উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা যাচ্ছে। জাতীয় দলের সাবেক কোচ মারুফুল হক বলেন, ‘কানাডা বিশ্বকাপে খেলে। সেই দেশের জাতীয় দলে খেলা একজন ফুটবলার আমাদের দলে আসা নিঃসন্দেহে বড় অর্জন।’
সাবেক ফুটবলার জুলফিকার মাহমুদ মিন্টুর মত, ‘সামিত ও হামজার মতো খেলোয়াড়রা আমাদের মিডফিল্ডকে দুর্দান্ত শক্তি দেবে, বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ান প্রতিপক্ষদের বিপক্ষে।’
সাবেক তারকা ফুটবলার জাহিদ হাসান এমিলি বলেন, ‘একজন ডিফেন্সিভ, আরেকজন অ্যাটাকিং—এই কম্বিনেশন মিডফিল্ডে আমাদের আধিপত্য বাড়াবে। মিডফিল্ড নিয়ন্ত্রণ মানেই ম্যাচ নিয়ন্ত্রণ।’
বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের সমস্যা গোল স্কোরিং। এমিলির বিশ্বাস, ‘সামিতের মতো একজন অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার আসায় আমাদের আক্রমণ ধারালো হবে, গোলের সুযোগও বাড়বে।’
সামিতের আগমন নিয়ে ফুটবল মহলে যেমন আশার আলো, তেমনি বন্ধুর জন্য অপেক্ষায় থাকা কাজেমের চোখেও এখন ভাসছে স্বপ্ন—বাংলাদেশের জার্সিতে একসঙ্গে মাঠে নামার।